ঢাকার উবার চালক হেলাল হত্যার ঘটনায় ৩ হত্যাকারীকে  আটক করেছে ভৈরব র‍্যাব সদস্যরা 

মিলাদ হোসেন অপু, ভৈরব প্রতিনিধি:
ঢাকার গাড়ীচালক হেলাল উদ্দিন (৩৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল বুধবার  ৩ জন হত্যাকারীকে আটক করেছে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা। আটককৃতরা হলো ঢাকার  তেজঁগাও কলেজের এইস এস সির ছাত্র মোঃ শহীদ আফ্রিদী (১৮)   একই কলেজের  আবু কাওসার শান্ত (১৮) ও স্কুলের দশম শ্রেনীর ছাত্র হাফিজুর রহমান শুভ  (১৪) । আটককৃতদের সবার বাসা ঢাকার তেজঁগাও এলাকায়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ সন্মেলন করে হত্যাকান্ডের বিবরণ ও হত্যাকারী আটকের কথা জানায় র‍্যাব। হত্যার ঘটনাটি গত ২৮ সেপ্টেম্বর হলেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে র‍্যাবের সময় লাগে। ঘটনায়  নিহতের স্ত্রী ফারহানা আক্তার হীরা অজ্ঞাত আসামী করে  একটি মামলা দায়ের  করে ( মামলা নাম্বার ০৬) । তাদেরকে আজই পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ সন্মেলনে সাংবাদিকদেরকে র‍্যাব জানান, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজোলার দুঘর গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন ঢাকায় রেন্টে কারের গাড়ী চালাত। গত ২৮ সেপ্টেম্বর হাফিজুর রহমান শুভ তার খালার বাড়ী হবিগন্জে যাওয়ার কথা বলে গাড়ীটি ভাড়া করে। এর আগে তার দুই বন্ধু আফ্রিদী ও শান্তকে নিয়ে সে  পরিকল্পনা করে তারা মূলধনের টাকা যোগার করতে গাড়ী ছিনতাই করবে। ঘটনার দিন রাতে হেলালের গাড়ীটি ভাড়া করে ঢাকা থেকে গভীর রাত ২ টায় হবিগন্জ পৌঁছে তারা তিন বন্ধু। এসময়  তারা চা খাওয়ার কথা বলে চালককে রাস্তার  পাশের  একটি দোকানে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে  নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে প্রথমে শান্ত তাকে পিছনদিক দিয়ে মাথায় রড দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর শুভ তাকে গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। পরে হেলালের লাশ গাড়ীতে ভরে রাতেই  ঢাকায় রাওয়ানা হয় তারা। উল্লেখ্য শুভ আগে থেকেই গাড়ী চালানো জানত। তার বাবাও গাড়ীচালক ছিল বলে র‍্যাব জানায়। তারপর তারা গাড়ী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে  ব্রাক্ষনবাড়ীয়া এলাকার ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ব্রাক্ষনবাড়ীয়া পুলিশ তার লাশটি অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন পত্রিকায় এখবর প্রকাশ হলে নিহতের স্ত্রী খবর দেখে ব্রাক্ষনবাড়ীয়া থানায় এসে মর্গে তার স্বামীর লাশ সনাক্ত করে। তারপর মামলা করেন তিনি। পত্রিকার খবরের সূত্র ধরে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা  রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। র‍্যাব সদস্যরা হত্যার ক্লো উদঘাটন করতে   দীর্ঘ ১৯ দিন চেষ্টা চালিয়ে মোবাইলসহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে  তিন অপরাধীকে গতকাল বুধবার ঢাকার তেজঁগাও তাদের বাসা থেকে আটক করে। পরে বুধবার রাতেই তিনজনকে  ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে আসে। আটককৃতরা র‍্যাবের কাছে ঘটনার বিবরণ ও হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে বলে জানায় র‍্যাব।
ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যুবায়ের জানান এই হত্যাকান্ডটি ছিল ক্লোবিহীন।  হত্যাটির প্রথমে প্রতক্ষ্যদর্শী বা কোন স্বাক্ষী ছিলনা। মোবাইলের ভূয়া সিম ও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দীর্ঘ চেষ্টার পর হত্যার ঘটনার রহস্য উম্মোচন করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment